বিশ্ব ব্যবস্থা বলতেছে বাংলাদেশ কেন, কোনো দেশেই খিলাফত প্রতিষ্ঠা হবার সুযোগ নাই। আর যদি আফগানিস্তানের মতো কেউ সেটা করতে চাই তাহলে তাদেরকে সেই প্রাইস পে করতে হবে যেটা আফগানিস্তান করেছে ৪০ বছর ধরে। একটানা ৪০ বছর যুদ্ধের মধ্যে থাকা সোজা কথা না।
বাংলাদেশে খিলাফত প্রশ্ন আসলে প্রথম বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে হুজুরদের ভেতরের কলহ। যদি তারা সেটা অতিক্রম করতেও পারে এরপর দেশের সেকুলার সমাজের সাথে তাদের লড়তে হবে। একই সাথে ডিপ স্টেটের সাথে লড়তে হবে। এসবের পর যদি তারা জিতেও যায়, তাদেরকে মোকাবিলা করতে হবে ভারত সহ বিশ্বের বড় বড় শক্তির সাথে। আর এখানেই কবিকে নিরব হতে হবে।
বাংলাদেশে খিলাফত প্রতিষ্ঠা হবার সম্ভাবনা কতটুকু?
ইতিমধ্যেই আইএস জঙ্গি সংগঠনের পতাকা দেশের বিভিন্ন যায়গাতে উড়িয়ে বিশ্বের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়া হয়েছে। সামরিক হস্তক্ষেপ না, যদি অর্থনৈতিক হস্তক্ষেপও বিশ্ব করে তাহলে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে খুঁজে পাওয়া যাবে?
আর বাংলাদেশের বর্ডার যদি দেখেন তাহলে বুঝবেন এটা কোনো প্রাকৃতিক বর্ডার না। সামরিকভাবে কোনো এডভান্টেজ পাবেনা বাংলাদেশ। ইরানের বর্ডার প্রাকৃতিক। পুরো বর্ডার জুড়ে পাহাড়-পর্বত আর মরুভূমি আছে। এই কারনেই শতাব্দীর পর শতাব্দী তারা স্বাধীন থাকতে পেরেছে। আফগানিস্তানের বর্ডার এবং দেশের পরিবেশ পর্বতময়। কিন্তু বাংলাদেশের কি সেই সব এডভান্টেজ আছে?
খিলাফত প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের অগ্রগতি কতদূর? এ বিষয়ে তারা কোনোদিন জনগণের সামনে খোলাসা করে কিছু বলেনি। তাদের খিলাফত কোন চরিত্রের হবে, শাসন এবং দায়িত্ব কিভাবে বন্টন করা হবে এব্যাপারে জনগণকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। খিলাফত নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা হলে তারা সেগুলো সুকৌশলে এড়িয়ে যান ধর্মের বিধান এই দোহায় দিয়ে। কিন্তু তারা এটা বুঝতে চান না যে, শুধুমাত্র ধর্মের বিধান এই কথা বলে সমালোচোনা পাশ কাটিয়ে যাবার সুযোগ নেই। জনগণকে অন্ধকারে রেখে দেশের শাসন নীতি পরিবর্তন করা বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের মাটিতে সম্ভব নাও হতে পারে। বাংলাদেশের মুসলিমরা অনেক লিবারেল এবং তারা বিগত ৫০ বছর ধরে যে আবহে দেশ পরিচালনা হতে দেখেছে সেটা থেকে কোনো পরিবর্তন করা হলে জনগণ স্বভাবতই প্রশ্ন তুলবে।
মাইটোসিস কোষ বিভাজন দুইটি পর্যায়ে হয়। একটি প্রস্তুতি পর্যায় এবং অপরটি আসল কোষ বিভাজন। মাইটোসিস কোষ বিভাজনের প্রস্তুতি পর্যায় সম্পন্ন হতে সময় নেয় পুরো চক্রের ৯০-৯৫% আর মূল বিভাজন হয় মাত্র ৫-১০% সময়ে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে যারা খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চান তাদের তেমন কোনো প্রস্তুতি নেই। খিলাফত প্রতিষ্ঠার পর কি হবে সেই বিষয়েও তাদের কোনো একশন প্লান নেই। বিস্তারিত পরিকল্পনা ছাড়া খিলাফত প্রতিষ্ঠার মতো চ্যালেঞ্জিং কাজ করতে গেলে সেটার প্রভাব সারা বাংলাদেশের মানুষের উপর পড়বে। এবং সেই প্রভাব হবে নেতিবাচক আর ফলাফল হবে সুদূরপ্রসারী।