Sunday, July 6, 2025

যত্রতত্র দেওয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজন সচেতনতা সৃষ্টি এবং আইনের প্রয়োগ

Share

আপনি ঢাকার রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন, দেখলেন দেয়ালে পোস্টার, ফ্লাইওভারের পিলারে পোস্টার, যেদিকে তাকাচ্ছেন সেদিকেই শুধু পোস্টার আর পোস্টার। এ যেন এক পোস্টারের শহর। নির্বাচনের সময় পুরো শহর পোস্টারে ছেয়ে যায়। সেই পোস্টার সময়মত অপসারণ না করার কারনে শহরের পরিবেশ যেমন নষ্ট হয়, একইভাবে সেই সব পোস্টার ড্রেনে পড়ে পানি ও বর্জ্য নিষ্কাশনে বাঁধা সৃষ্টি করে থাকে। নষ্ট করে শহরের সৌন্দর্য।

এই অবস্থা শুধু ঢাকা শহরের না, বরং বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি শহর এবং গ্রামের দৃশ্য। যদিও যত্রতত্র পোস্টার লাগানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে, সেই সাথে আছে শাস্তির ব্যবস্থাও। কিন্তু আইনকে তোয়াক্কা না করেই চলছে যেখানে সেখানে পোস্টার লাগানো।

দেওয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার ২০১২ সালে দেওয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ)আইন নামে একটি আইন পাস করে। উক্ত আইন অনুসারে নির্ধারিত স্থান ব্যতীত কোথাও দেয়াল লিখন এবং পোস্টার লাগানো যাবেনা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দেওয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানোর জন্য প্রশাসনিক আদেশ দ্বারা স্থান নির্ধারণ করে দিতে পারবে এবং নির্ধারিত স্থানে দেওয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানো যাবে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতিক্রমে নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনো স্থানে নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে এবং নির্দিষ্ট ফি প্রদান সাপেক্ষে, দেওয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানো যাবে।

কোনো ব্যক্তি যদি উক্ত বিধান লঙ্ঘন করে দেওয়াল লিখন অথবা পোস্টার লাগায়, তাহলে তার কাজ শাস্তি যোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। কারো বিরুদ্ধে উক্ত অপরাধ প্রমাণিত হলে তিনি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন অনাদায়ে অনধিক ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা যাবে। সেই সাথে উক্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট দেয়াল লিখন অথবা, পোস্টার অপসারণ করার নির্দেশ প্রদান করা যাবে। যদি উক্ত অপরাধ কোনো সুবিধাভোগীর অনুকূলে সংঘটিত করা হয় সেক্ষেত্রে উক্ত সুবিধাভোগী ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে অনধিক ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন। সেই সাথে উক্ত সুবিধাভোগী ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট দেয়াল লিখন অথবা, পোস্টার অপসারণ করার নির্দেশ প্রদান করা যাবে।

যত্রতত্র পোস্টার লাগানো প্রতিরোধ করার জন্য আইন থাকলেও আইনের প্রয়োগ না থাকা এবং পর্যাপ্ত শাস্তির বিধান না থাকার কারনে উক্ত অপরাধ কমানো সম্ভব হচ্ছে না। সচেতনতার অভাব এবং আইন মানতে অনীহা থাকাও উক্ত অপরাধ সংঘটিত হবার কারন।

যত্রতত্র দেওয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। সেইসাথে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পোস্টার অপসারণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে উদ্ধুদ্ধ করতে হবে। একই সাথে তাকে আইনের কথা সরণ করিয়ে দিতে হবে। সর্বোপরি সবার সচেতনতা এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধই পারে পোস্টার মুক্ত একটি সুন্দর শহর উপহার দিতে।

Table of Contents

Read more

Related Posts

Join our community of SUBSCRIBERS and be part of the conversation.

To subscribe, simply enter your email address on our website or click the subscribe button below. Don’t worry, we respect your privacy and won’t spam your inbox. Your information is safe with us.

32,111

Followers

32,214

Followers

11,243

Followers