এ বছর জুলাই অভ্যুত্থ্যানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন হলে বিডিআর হত্যা মামলা নতুন করে সামনে আসে। বর্তমানে বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে দুইটি মামলা আদালতে বিচারাধীন আছে। ৫ আগস্টের পর অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিডিআর হত্যা মামলা সহ পুরো ঘটনার তদন্তে নতুন একটি কমিশন গঠন করবে সরকার।
তবে আজ ১৫ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল তানিম খানের মাধ্যমে হাইকোর্ট বিভাগকে জানান যে, বর্তমানে দুইটি মামলা চলমান থাকায় আপাতত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার।
এই বিষয়ে লিগ্যাল নোটিশ প্রদানকারী আইনজীবী জানান, মামলা চলমান থাকা অবস্থায় কমিশন গঠনের প্রিসিডেন্ট বাংলাদেশে আছে। বংবন্ধু হত্যা মামলা চলাকালীন সময়ে হত্যাকান্ড তদন্তের জন্য কমিশন গঠন করা হয়েছিলো। তিনি আরো বলেন, বিডিআর হত্যা মামলা নিয়ে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পূর্বের দেয়া বক্তব্যের সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক।
উল্ল্যেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত বিদ্রোহে ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তা সহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান। পরবর্তীতে, পিলখানার অভ্যন্তরে গনকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। সেখান থেকে এবং পিলখানার আশপাশের এলাকা থেকে নিহত অফিসারদের মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায়। এ ঘটনায় রাজধানীর লালবাগ থানায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে মামলাগুলো নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত করা হয়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডি হত্যা মামলায় ২৩ জন বেসামরিক ব্যক্তিসহ মোট ৮২৪ জনের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগপত্র দাখিল করে। একইসঙ্গে, বিস্ফোরক আইনের মামলায় সিআইডি ৮০৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। পরবর্তীতে আরও ২৬ জনকে যুক্ত করে মোট ৮৩৪ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। বিচার প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় তৎকালীন বিডিআরের ডিএডি রহিমসহ চার আসামির মৃত্যু ঘটে। বর্তমানে অনেক বিডিআর সদস্য জেলখানায় বন্দী আছেন। বিনা বিচারে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কোনো রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্যদের এভাবে বন্দী করে রাখার ঘটনা নজিরবিহীন।