আজকে আমরা যেই বইটি রিভিউ করতে চলেছি সেটি হলো হেনরি ফোর্ডের সিক্রটস অব জায়োনিজম। উক্ত বইটি ভাষান্তর করেছেন ফুহাদ আল আজাদ।
বইটির যেই বিষয় গুলো আলোচনার দাবি রাখে সেগুলো হলো —
- ইহুদিদের ইতিহাস।
- আন্তর্জাতিক ইহুদি ষড়যন্ত্রের অস্তিত্ব।
- প্রকাশনা শিল্পে ইহুদিদের ষড়যন্ত্র।
- বলশেভিক বিপ্লব এবং ইহুদি ষড়যন্ত্র।
- শিল্প-সংস্কৃতিতে ইহুদি ছোবল।
- আন্তর্জাতিক ও আমেরিকার অর্থব্যবস্থায় ইহুদি দৌরাত্ম্য।
সূচনালগ্ন থেকে ইহুদিরা বাণিজ্যিক মনোভাব পোষণ করতো। তারা বাণিজ্য করতে নানান কৌশল উদ্ভব করে জ্যান্টেলদেরকে তাদের দাসে পরিণত করতো। ইহুদিরা কায়িক বা শারিরীক পরিশ্রম করতো না। তারা মানসিক বা মনস্তাত্ত্বিক শ্রমকে কাজে লাগিয়ে বাণিজ্যিক খাতকে তাদের আওতাভুক্ত করে রেখেছে।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়-তারা বিভিন্ন শ্রমিক সংঘটনকে উদ্ভুদ্ধ করতো;তাদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে। শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন করতো ঠিকই, কিন্তু একই সাথে ইহুদিরা বিভিন্ন নিত্য-সামগ্রীর দাম বাড়িয়ে দিত।
যার ফলে মজুরি বাড়লেও নিত্য-সামগ্রী কেনার মতো অর্থ তাদের থাকতো না। নিত্য দিনের দ্রব্য- সামগ্রী কিনতে না পেরে তারা হতাশ হয়ে যেত। যখন শ্রমিকদের তারা হতাশাগ্রস্থ দেখতো, তখন তারা তাদেরকে বিভিন্ন নেশা বা মদ্য পানে অভ্যস্ত করতো। তারা চাইতো যেনো জ্যান্টেলরা সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হতে না পারে।
প্যালেস্টাইনকে বলা হয় ‘প্রাচ্য ও প্রাচুর্য্যের’ শহর এবং ব্যবসায়ের কেন্দ্র বিন্দু। আর ইহুদিরা সে জন্যই সুদীর্ঘ সময় ধরে প্যালেস্টানকে দখল করার পরিকল্পনা করছে। তারা যদি প্যালেস্টাইন দখলের পরিকল্পনা সফল করতে পারে তাহলে- “এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও ম্যাডিটারিয়ান সাগরে নিজেদের বানিজ্যিক পথ প্রসারিত করবে এবং পৃথিবীর বুকে নিজদেরকে বানিজ্যিক কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত করতে পারবে। তাই তারা প্যালাস্টাইনের বুকে বারবার ক্ষেপণ অস্ত্র নিক্ষেপ করছে।
পুরো পৃথিবীর সংবাদপত্রকে ইহুদিরা নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের বিশ্বাস- “সংবাদপত্রে যার যত প্রভাব পুরো পৃথিবীতে তার তত ক্ষমতা। ” তারা সংবাদ পত্রকে ৩ টি ভাগে ভাগ করে —
- প্রথম ভাগ- সর্তকতার সাথে একটি সংবাদ পত্র তাদের পক্ষে কথা বলবে এবং তাদের বিপক্ষে কোনো সংবাদ পত্র যদি কথা বলে, ঐ সংবাদের বিপক্ষে সমালোচনা করবে।
- দ্বিতীয় ভাগ- এই ভাগে সংবাদ পত্র থাকবে আধা-সরকারি। এই ভাগে অর্ধেক সংবাদ পত্র তাদের পক্ষে কথা বলবে, বাকি অর্ধেক তাদের বিপক্ষে। কিন্তু মূল কেন্দ্র বিন্দুতে তাদেরই অবস্থান। এটি মূলত হবে নিরপেক্ষ সংবাদ মাধ্যম এবং জ্যান্টেলরা এই সংবাদ পত্রটি প্রতিনিয়ত পাঠ করবে।
- তৃতীয় ভাগ- এই ভাগে সংবাদ পত্র সম্পূর্ণরূপে তাদের বিরোধীতা করবে, যাতে করে জ্যান্টেলরা তাদের উপর সন্দেহ না করে।
ইহুদিরা বলে, ” আমরা সংবাদ পত্রকে আমাদের নিজেদের করে নিয়েছি এমনকি জ্যান্টেলরা তাদেরকে বিশ্বাস করছে,যার ফলে তৈরি হবে না নতুন কোনো সংবাদ পত্রের প্রতিষ্ঠান। সংবাদ পত্র আমাদের আওতাভুক্ত থাকবে এবং আমরাই পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করবো।”
ইহুদিরা জ্যান্টেলদের জন্য এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করবে, যাতে থাকবে শুধু যৌন শিক্ষা। থাকবে না কোনো নৈতিক বা ধর্মীয় শিক্ষা। নৈতিক শিক্ষা ধ্বংস করতে তারা পাঠ্যপুস্তক থেকে ধর্মীয় শিক্ষা উঠিয়ে দিয়ে, যুক্ত করবে গণিত বা বিজ্ঞান।
তারা বিভিন্ন মতবাদ উদ্ভাবন করে “Divide and rule” policy নীতির জন্ম দেয়। তারা একতা, সমতা এবং সাম্যের নীতির প্রবর্তন করে। তারা গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র বা রাজতন্ত্র মতবাদ দিয়ে পুরো জাতিকে বিভক্ত করে ফেলে।
তারা চায় না পুরো জাতি যেন এক হতে পারে। জাতির মধ্যে যতই ফাটল ধরবে ততই তাদের সাফল্যের পথ প্রসারিত হবে। একজন প্রকৃত ধার্মীক ব্যক্তির কাছে কখনো প্রত্যেক ধর্ম সমান হতে পারে না। একজন মুসলিমের কাছে তার ধর্ম সবার সেরা, বা অন্যান্য ধর্মের মানুষের কাছে তাদের ধর্ম সবচেয়ে সেরা। যখনই তারা বলবে প্রত্যেক ধর্ম সমান তখনই তারা ইহুদীবাদকে লালন করবে।
ইহুদীরা চায় এই মতবাদটি মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিয়ে, তাদেরকে নাস্তিকতাবাদের দিকে ঠেলে দেওয়া। যত বেশি নাস্তিকের জন্ম হবে, তত বেশি তারা তাদের নিজেদের ধর্মীয় মতবাদ ছড়িয়ে দিয়ে পুরো পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।