২০২৪ এর জুলাই গনঅভ্যুত্থানের পর ঘটে যাওয়া শিক্ষক লাঞ্ছনা এবং পদত্যাগের ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে। সেই গল্পই এই আর্টিকেলে লিখা হয়েছে।
ক্ষমতা মিস্টেরিয়াস। এইটার ব্যবহার খুব সতর্কতার সাথে করতে হয়। তা না হলে যে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে তা আমরা সবাই নিজের চোখে দেখেছি। ক্ষমতার ন্যাচার হলো এইটা যার নিকট থাকে তাকে অমানুষ বানিয়ে দেয়। যেন ক্ষমতাবান ব্যক্তি অমানুষ হতে না পারেন সেই জন্যই ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হয়।
ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করার জন্যই রাষ্ট্রীয় কাঠামো গড়ে উঠে। যেন, পরিমিত ভাবে ক্ষমতার ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, ধরুন কেউ আপনাকে থাপ্পড় দিলো বিনা কারনে। সাথে সাথেই আপনি উত্তেজিত হবেন এবং ওই ব্যক্তিকে কিল ঘুষি মারতে উদ্যোগী হবেন। সেটা কি ঠিক হবে? অনেক সময় আমরা অপরাধীকে শাস্তি দিতে যেয়ে নিজেই আরেকটা অপরাধ করে ফেলি।
এইযে ডিসপ্রপোরশনেট ক্ষমতা ব্যবহারের ঝুঁকি এটা তৈরি হয় আইন আদালত ফাংশন না করলে। মূলত বিচারের দায় বা, এজেন্সি আমরা সরকারকে দিয়ে থাকি যেন প্রতিশোধ নেবার নেশা আমাদেরকে নতুন অপরাধ থেকে বিরত রাখে। আরেকটি কথা, কখনোই পূর্বের করা কোনো অপরাধ ভবিষ্যতে করা বা, করতে চেষ্টা করার ডিফেন্স হতে পারেনা।
আমার পর্যবেক্ষণ হলো, বর্তমানে সরকার এখনো ক্ষমতাকে ঠিকমতো গ্রহণ করতে পারেন নি, অথবা, সেই চেষ্টা করতে তারা উদ্যোগি না। দেখেন, বিশাল এক গণঅভ্যুত্থান বা, বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট রেজিমকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। যার নেতৃত্বে ছাত্ররা ছিলো। তারা মহৎ কাজ করেছে, জীবন বিসর্জন দিয়েছে। এই ঋণ জাতি শোধ করতে পারবেনা।
গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব এবং প্রত্যক্ষ ভাবে ছাত্রদের অংশগ্রহণের ফলে ক্ষমতার কিছু অংশ তাদের হাতে রয়ে গিয়েছে। সবাই তো আর ভালো মানুষ না। ছাত্রদের মধ্যেও একটা অংশ আছে যারা দুষ্টু প্রকৃতির। স্বভাবতই তারাও ক্ষমতার অংশীদার। ফলে স্কুল-কলেজ গুলোতে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে, যা অনভিপ্রেত। এইসব ঘটনা যদি বন্ধ করতে হয় তাহলে সরকারকে এবসোলিউট ক্ষমতা গ্রহণ করতে উদ্যোগী হতে হবে। ছাত্রদেরকে শান্ত করতে হবে। এই দায়িত্ব নিতে হবে ছাত্র নেতৃত্বকেই।
দেখেন, ছাত্রদেরকে ক্ষমতা শূণ্য করা সম্ভব না। তারা বিশাল অগ্নিস্ফুলিঙ্গ নিয়ে বেড়ে ওঠে। ছাত্রদের এই অমিত শক্তিকে যদি ঠিক পথে ব্যবহার করা না যায় তবে রাষ্ট্রের যে কি মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে তা আমরা অনুধাবন করতে পারছি না। অবিলম্বে সমস্যার সমাধান করার জন্য সরকার এবং ছাত্রনেতাদের ভূমিকা নিতে হবে। তা না হলে যেই স্পিরিট নিয়ে বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মানের স্বপ্ন জাতি দেখেছিলো তা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাবে।