Tuesday, June 3, 2025

অভিযোগ গঠনের ২১ দিনের মাথায় আলোচিত আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ঃ অভিযুক্ত হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলা

Share

বিচার শুরুর মাত্র ২১ দিনের মাথায় আলোচিত আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় প্রদান করেছে আদালত। প্রধান অভিযুক্ত হিটু শেখের মৃত্যুদন্ডের রায় দিয়েছেন মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ।

উল্ল্যেখ্য, গত ৬ মার্চ শিশু আছিয়া তার বোনের বাড়ি বেড়াতে গেলে ধর্ষণের স্বীকার হন। এই ঘটনায় তার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, শাশুড়ি জাহেদা বেগম, বোন জামাই সজিব শেখ এবং সজিবের বড় ভাই রাতুল শেখকে অভিযুক্ত করে আছিয়ার মা ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

উক্ত ধর্ষণের ঘটনা সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। সেই সময়ে মাগুরাসহ সারা দেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা উক্ত ঘটনার যথাযথ এবং দ্রুত বিচার দাবি করে সড়ক অবরোধ, থানা ও আদালত ঘেরাও করেন।উত্তেজিত গ্রাম বাসি অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করেন।

ধর্ষণের স্বীকার মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে মাগুরা ও ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও আবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাকে ঢাকা সিএমইএচ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসারত অবস্থায় ১৩ মার্চ তৃতীয় শ্রেণিতে পড়া আছিয়া মৃত্যুবরণ করেন।

পরবর্তী সময়ে মামলায় অভিযুক্ত চার আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন গত ১৩ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট জমা দেন। ২০ এপ্রিল মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সম্মানিত বিচারক এম জাহিদ হাসান মামলাটি আমলে নেন এবং চার্জ গঠনের জন্য ২৩ এপ্রিল দিন ধার্য্য করেন। চার্য গঠনের পর ২৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয় সাক্ষ্য গ্রহণ। ঢাকা মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত দুইজন ডাক্তারের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে ৭ মে তা শেষ হয়।

মামলার প্রধান আসামী হিটু শেখ ১৫ মার্চ আদালতের সামনে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ স্বীকার করেন এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মামলাটিকে সরকার খুব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেন। সরকার মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়িত্বরত সরকারি পক্ষের আইনজীবীদের সহায়তা দেয়ার জন্য একজন স্পেশাল প্রসিইউটর নিয়োগ দেন। এডভোকেট এহসানুল হক সমাজী সেই দায়িত্ব পালন করেন।

এদিকে মাগুরা আইনজীবি সমিতির সদস্যরা আসামী পক্ষের হয়ে মামলা পরিচালনা করতে অস্বীকৃতি জানালে সরকার লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে সোহেল আহমেদ নামে একজন আইনজীবীকে নিয়োগ করেন।

মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ শেষে শনিবার (১৭ মে) মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। উক্ত রায়ে মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া বাকি তিন আসামি খালাস পেয়েছেন।

বিচার শুরুর মাত্র ২১ দিনের মাথায় আলোচিত এই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হয়। ঘটনার মাত্র দুই মাস ১১ দিনের মাথায় এই মামলার রায় হওয়াতে সারা দেশের জনগণ অনন্দিত। এখন উক্ত আসামীর দ্রুত রায় বাস্তবায়ন চান দেশের সাধারন জনগণ। অনেকেই মনে করেন রায় বাস্তবায়ন হলে ধর্ষন প্রবণতা কমে আসবে। বিচার বিভাগের দ্রুত রায় প্রদান জনমনে স্বস্তির সঞ্চার করেছে।

Table of Contents

Read more

Related Posts

Join our community of SUBSCRIBERS and be part of the conversation.

To subscribe, simply enter your email address on our website or click the subscribe button below. Don’t worry, we respect your privacy and won’t spam your inbox. Your information is safe with us.

32,111

Followers

32,214

Followers

11,243

Followers